শুঁটকির চর দুবলা!

প্রকাশঃ জুন ২৬, ২০১৫ সময়ঃ ৭:৫৩ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:১৬ পূর্বাহ্ণ

জহির উদ্দিন মিশু

dublar_chor4একদিকে অ্যাডভেঞ্চার অন্যদিকে ভয় ও শিহরণ। জলে কুমির, ডাঙ্গায় বাঘ। এ যেন প্রকৃতির অকৃপণ হাতের সৃষ্টি। বাংলাদেশের দক্ষিণসীমায় অবস্থিত এমনই এক ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন। সুন্দরবনের প্রতিটি মুহূর্ত যেন রহস্য ও রোমাঞ্চঘেরা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পারিপাশ্বিক অবস্থার কারণে এ বনের রয়েছে বিশ্বজুড়ে সুনাম।

সুন্দরবনের অন্তর্গত ছোট্ট একটি চর দুবলা। এই চরের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে ছোট ছোট নদী; সেসব নদী মিশেছে বঙ্গোপসাগরে।দুবলার চর একটু ভেতরে অবস্থিত বিধায় কোনো দশনার্থীই সহজে এই চরে প্রবেশ করতে পারে না। দুবলার চরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অপরূপ মন মাতানো দৃশ্য সব পর্যটককে বিমোহিত করে।

দুবলার চরের লোকসংখ্যা প্রায় ৬০০ জন। অধিকাংশই পেশায় মৎস্য শিকারি বা জেলে। অনেকে আবার কাঠ কিংবা বাঁশের ব্যবসাও করে। দুবলার চরের কিছু বাসিন্দা নৌকা চালানোয় খুবই পারদর্শী। তারা পর্যটকদের নৌকায় করে বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখায়।unnamed-2

দুবলার চরের চারদিকে রয়েছে অসংখ্য সুন্দরী ও কেওড়া গাছ। যে গাছগুলো তার গভীর মায়া-মমতায় জড়িয়ে রেখেছে দুবলার চরের প্রকৃতিকে। দুবলার চর অন্য যে কারণে বেশি বিখ্যাত তা হলো এর শুঁটকি মাছ। এই চরের শুঁটকি মাছের মধ্যে রয়েছে রূপচাঁদা, কোরাল, লইট্যা, ফাইস্যা ইত্যাদি।

দুবলার চরে রয়েছে অসংখ্য কাঠুরিয়া ও দিনমজুর। এছাড়া রয়েছে বিচিত্র ধরনের প্রাণী ও পশুপাখি। পৃথিবীর অন্যতম আকর্ষণীয় প্রাণী হরিণের বসবাস রয়েছে দুবলার চরে। হরিণগুলো দুবলার চরের গহীনে বাস করে। এ কারণে শিকারিরা সহজে হরিণ শিকার করতে পারে না। ভয়ঙ্কর হলেও সত্য যে, দুবলার চরে রয়েছে ভয়াবহ জলদুস্য। তাই এখানে গেলে যথাযথ নিরাপত্তা নিয়ে এখানে যাওয়া উচিত। কিছু প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও দুবলার চর বাংলাদেশের অন্যতম প্রাকৃতিক ঐতিহ্য।dublar_chor5

প্রতি বছরের কার্তিক মাসে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের রাসমেলা এবং পুণ্যস্নানের জন্যও দ্বীপটি বিখ্যাত। বলা হয়ে থাকে, ২০০ বছর ধরে এ রাসমেলা হয়ে চলেছে। পুণ্যার্থীরা বিশ্বাস করেন, রাসমেলা হচ্ছে রাধা-কৃষ্ণের মিলন উৎসব। তিন দিনের এ মেলায় দেশি-বিদেশি অনেক পর্যটকের সমাগম হয়।

যেভাবে যেতে হবে: ঢাকা থেকে খুলনার মংলা পোর্টে যেতে হবে। সেখান থেকে ট্রলার কিংবা লঞ্চ ভাড়া করে যেতে হবে দুবলার চরে। সময় লাগবে ৬/৭ ঘন্টা। খুলনা শহরের লঞ্চঘাট থেকেও লঞ্চ ভাড়া করে যেতে পারেন।

প্রতিক্ষণ/এডি/জহির

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G